Saturday, October 12, 2019

আজীবিক ধর্ম


মুখবন্ধ --
হিন্দু ধর্মে বর্নবৈষম্য ও ব্রাহ্মণ বাদের অত্যাচার এর কারনে ভারতে বিভিন্ন সময় ধর্ম আন্দোলন কিংবা ভক্তিবাদী আন্দোলন ঘটে।। কেউ কেউ সরাসরি ধর্মের বিরোধিতা করে আবার কেউ কেউ ধর্মের কিছু দর্শন গ্রহণ ও পরিত্যাগ করে নিজেদের মত ধর্মের বা মতবাদের আবির্ভাব ঘটায়।। আপনারা বৌদ্ধ জৈন ধর্মের নাম অনেক শুনেছেন।।
আজীবিক দের গুহা

বিহারের বার্বারায় আজীবিক দের গুহা

আজীবিক 
এইগুলো বর্তমানে টিকে ও রয়েছে । তবে আরো কয়েকটি ধর্ম আবির্ভাব হয়েছিল। এদের মধ্যে একটি হল আজীবিক ধর্ম ।। কিন্ত কালের নির্মম পরিহাসে এই ধর্ম ভারতবর্ষ থেকে বিলুপ্তি ঘটে।।

উৎস
   ষষ্ঠ শতকে উত্তর ভারতের ব্রাহ্মণ ধর্মের বিরুদ্ধে বহু প্রতিবাদী ধর্ম মতের উদ্ভব এগুলি সংখ্যা ছিল আনুমানিক  60 বা তার বেশি এদের মধ্যে আজীবিক ধর্ম বেশ জনপ্রিয় ছিল অশোকের শিলালিপি থেকে এ কথা জানা যায় গুপ্ত যুগে ও আজীবিক দের গুহার কথা জানা যায়  । আজীবিক ধর্মের প্রবক্তা ছিলেন গোশালমংখলিপুত্ত।     জৈন ধর্মের প্রবর্তক বর্ধমান মহাবীর এর সমসাময়িক ছিলেন। আজিবিক দের কোন ধর্মীয় গ্রন্থ পাওয়া যায় নি।। এই ধর্মের সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি জানা যায় বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মে।

আজীবিক দর্শন -
   আজিবিক ধর্ম বিশ্বাসে নাস্তিক্যবাদ এর প্রভাব বিশেষভাবে দেখা যায় । তারাও চার্বাক দের মত যাগ-যজ্ঞ , দেব দেবী পুজোর কোন নিয়ম মানত না। আজিবিক দের বিস্বাস ছিল যে মানুষের কর্মফল হল অখন্ডনীয়। তারা আত্মায় বিস্বাস করতো। তাদের মধ্যে জন্মান্তর বাদ টাও ছিল।। আজীবিকরা বিস্বাস করতো যে মানুষ বহু জন্ম সৎভাবে কাটাতে পারলে তবে নিয়তি বা কর্মফল হাত থেকে নিস্তার পেতে পারে। এমনকি তাদের মতে পন্ডিত , মূর্খ , গরিব ধনী নির্বিশেষে সবাইকে মোট 84 লক্ষ বার জন্ম গ্রহণ করতে হবে। একটি একটি   করে জীবনচক্র অতিক্রম করার পর   অবশেষে জীবের দুঃখের অবসান হয়।  এজন্য  আজীবিক রা  সন্ন্যাস  তপস্যাকৃত জ্ঞান চর্চার ওপর বিশেষ জোর দেয়।   ব্রাহ্মণ ও শূদ্র সকলেই কর্মফলের অধীন। অর্থাৎ তারা বর্ণপ্রথা এ বিশ্বাসী ছিলেন। আজীবিক ধর্ম ছিল হতাশা থেকে জাত এবং নেতিবাচক। বৌদ্ধ ধর্মের মত এখানে ইতিবাচক ছিল না। এতে অদৃষ্টবাদ ছিল বড়ই প্রবল মানুষের কর্ম ও উদ্যম এতে শিথিল হয়ে যেত ।

আজীবিক ধর্মের প্রভাব-
আজীবিক দের কোন ধর্মগ্রন্থ পাওয়া  যায়নি। বৌদ্ধ ও জৈন শাস্ত্রে  আজীবিক সম্পর্কে যা বলা আছে তার থেকে আজীবিক দের সম্পর্কে আমরা জানতে পারি প্রথমদিকে আজীবিক দের প্রধান কর্ম কেন্দ্র ছিল অবন্তি ও অঙ্গ মধ্যবর্তী অঞ্চল । মৌর্য সম্রাট অশোক ও  দশরথ জন্য গুহা নির্মাণ করেন।  তাছাড়া অশোকের শিলালিপি দিয়েও তাদের সম্পর্কে জানা যায়। এই শিলালিপিতে তাদের প্রতি  সৎ আচরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  আজীবিক রা মূলত জাতিভেদ ও শ্রেণীভেদ এর সমালোচনা করার ফলে নিম্নবর্ণের লোকেদের কাছে জনপ্রিয়তা পায়।  শূদ্র ও অস্পৃশ্য এই ধর্মের অনুগত হয়ে পড়েন। এখানে বলে রাখি যারা অধিক অত্যাচারিত হয় এই শূদ্র ও অস্পৃশ্য তারাই ভারতবর্ষে যখন ই নতুন কোন ধর্মের উদ্ভব হয়েছে । তারা সেদিকেই ধাবিত হয়েছে। পূর্বে জৈন বৌদ্ধ আজীবিক থেকে বর্তমানে খ্রিস্ট ও ইসলাম ধর্ম । 

পতন-
  বৌদ্ধ ও জৈন দের তীব্র বিরোধিতার ফলে আজীবিক ধর্মের বিলুপ্তি ঘটে।   আজীবিক রা নাস্তিক্যবাদি হলেও মানুষের  কর্মফল ও জন্মান্তর সমস্যা সমাধানের পথ নির্দেশ না করায় এই ধর্মের জনপ্রিয়তা বৌদ্ধ ধর্মের তুলনায় কমে যায়।  সম্রাট অশোক যখন বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করে তখন আজীবিক দের হত্যা করার আদেশ দেয় । প্রায় 18 হাজার এর মত আজীবিক দের উৎখাত করা হয় তাদের ভূমি থেকে(যদিও এই এটি বিতর্কিত ও অপ্রামানিক)। খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতকে নবজাগ্রত বৈষ্ণব ধর্মের মধ্যে খুব সম্ভবত আজীবিক ধর্ম বিলীন হয়ে গিয়েছিল। আজীবিক ধর্মের প্রবর্তক গোশালমংখলিপুত্ত মৃত্যু ঘটে 484 খ্রিস্ট পূর্বে।
https://books.google.co.in/books?id=BiGQzc5lRGYC&pg=PA157&redir_esc=y#v=onepage&q&f=false

Saturday, September 28, 2019

মেহনতি সরকারের মেহনতি হত্যা(মরিচঝাঁপি)



তুমি কে আমি কে বাঙালি বাঙালি।। এই স্লোগান টি এখন অহরহ শোনা যাচ্ছে বাংলায়।। শুনতে খুব ভালো লাগছে। তবে বাস্তবিক দিক দিয়ে একটু পিছনে যদি যাই তাহলে একটা ঘটনার কথা মনে পরে।। মানে একটা জাতি নিজস্ব সংস্কৃতি হয়েও নিজ জাতির লোক হয়ে ওঠা হল না।। মরিচ ঝাঁপি। হ্যাঁ এক বাঙালি জাতির কালো অধ্যায়।  আবার স্মৃতি চারন  । মরিচ ঝাঁপি হত্যার  শিশু আজ যুবক , সেদিনের যুবক আজ বৃদ্ধ আর সেদিনের বৃদ্ধ আজ প্রয়াত। মরিচ জাতির সেই 30 হাজার জনগন কিন্তু মানুষ ছিল । ভারতের নাগরিক ছিল , উদ্বাস্তু হিসেবে এসেছিল , চোর গুন্ডা বদমাশ জঙ্গি ছিল না , " । তবুও তারা রাষ্ট্রীয় দমনের শিকার হল কেন?
তার আগে একটা গান মনে পড়লো ,

 "বড়ো আশা করে এসেছিগো  হিন্দু ভূমিলয়ে" ফিরায়না না বামনি" (টিকিয়ালা নয়)
 এবার আসি আসল কথায়

মরিচঝাঁপি অঞ্চলের মানুষেরা রোহিঙ্গাদের মত কোন বেআইনি লড়াই বা আন্দোলন কিংবা সরকারের টাকায় বসে খাওয়ার মনস্থির করে নি । তারা নিজেদের প্রচেষ্টায় কুটির শিল্প, হস্তশিল্প, স্বনির্ভর প্রকল্প, বিদ্যালয় ,নৌকা বানানো, নলকূপ বসানো, হাসপাতাল , সুন্দর বাসস্থান গড়ে তুলেছিল। শোনা যায় তারা নাকি জলের নোনা ভাগ দেখেই বলে দিতে পারতো মাছ চাষের অবস্থা। মাটি দেখে বলতে পারতো এখানে ফলন কেমন হবে।। কিন্তু ওই শাসক শ্রেণীর কাছে সেটা অপ্রিয় হয়ে ওঠে , কারন তখন ছিল মেহনতি মানুষের সরকার।। কিন্তু এই দ্বীপের মানুষ জন যেহেতু এই মেহনতি সরকার ছাড়াই নিজের মেহনতি তে অঞ্চলের উন্নতি করে তাই হয়তো সরকার পক্ষের কাছে ভালো লাগে নি।। 

সরকার অভিযোগ তুললো যে মরিচ ঝাঁপি অঞ্চল বন সংরক্ষণ এর আয়তায় পড়ছে।  এখানে বসবাস করা যাবে না। আর এই অভিযোগ আসে যে মরিচ ঝাঁপির উদ্বাস্তু রা নাকি জঙ্গলের গাছ পালা ক্ষতি করছে , তারা নাকি বেআইনি ভাবে কাঠ বিক্রি করছে। অথচ এই অঞ্চল টি বন সংরক্ষণ এর অঞ্চলে ছিল না।
সেদিন তারা আইনি পথেই লড়েছিল।, সেখানকার আক্রান্ত ও উদ্বাস্তু সংগ্রামী দেবব্রত বিস্বাস , আমরা বাঙালি সংগঠন, উদ্বাস্তু সমিতি সংগঠন এর তরফের আইনজীবী সাক্য সেন একটি আইনি চিঠি পাঠান 8 টি জায়গায়, ত্রাণ মন্ত্রণালয়,  প্রধান সেক্রেটারি  পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী , পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্র দপ্তরে, সুপেরিটেন্ডেন্ট পুলিশ দপ্তর সহ আরো অনেক।।
চিঠি তে বলা হয়।
1 গোসাবা থানার নেতাজি নগর যা মরিচঝাঁপি হিসাবে পরিচিত , এখানকার মানুষ 1978 থেকে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করছে। 
2  1978 থেকে সরকার কোন আইনের পথ না মেনে ভারতীয় সংবিধানের বিরুদ্ধে গিয়ে অবৈধ ভাবে সেখানকার মানুষদের অত্যাচার করছে।
3 রীতি মত যুদ্ধকালীন পরিবেশ চালানো হচ্ছে। ভাঙা নৌকা ডুবন্ত নৌকা থেকে নারী ও শিশু দের বাঁচাতে এগিয়ে আসা স্থানীয় বাসিন্দা দের উপর কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হচ্ছে, খাদ্য , জল আর ব্যবসা পাতি পুলিশ ও লঞ্চ দিয়ে ঘেরাও করে আটকে রাখা হয়েছে।। ঠান্ডা মাথায় খুনের সাথে গন হত্যার পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
নিজেদের পুনর্বাসনের জন্য অঞ্চলের প্রকৃতি ও পরিবেশ কোন ক্ষতি না করে তারা অল্প সময়ে মধ্যেই গড়ে তুলেছিল , চাষের যন্ত্রপাতি জন্যে কামারশালা, মাতুর বাসনকসন তৈরির কুমারের চাক, কাপড় বোনার তাঁত, বিড়ি মিষ্টান্ন আর রুটি তৈরির ব্যবস্থা, বাঁশের ঝুড়ির হস্তশিল্প , গড়ে তুলেছিল মাছ চাষ , ভেড়ি , পশুপালন , আনাজ সবজির জন্য ছোট বাগান, বিদ্যালয়, ডাক্তার খান চারটি , দুটো বাজার।
মামলা আবেদনকারীরা প্রয়োজনে সব কর্ম কাণ্ডের ফটো আদালতে দেখাতে চেয়েছিল । এই ফটো তে প্রমান হত যে জঙ্গলে সরকারের ক্যসূরিনা, বন সৃজন ,তাল গাছ নারকেল বাগান এইগুলোর কোন ক্ষতি হচ্ছিল না বরঞ্চ বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
অথচ রাজ্য সরকার এর আইন কে তোয়াক্কা না করে 30 হাজার মানুষ কে, শিশু, অসুস্থ রোগীদের খাদ্য পানীয় ওষুধ , প্রয়োজনীয় দ্রব্য ঘেরাও করে আটকিয়ে দিয়ে তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

এই চিঠিতে মরিচ ঝাঁপি বাসিন্দাদের পক্ষে দাবি তোলা হয়েছিল । স্পিড বোট গুলো সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল , সমস্ত অবরোধ তুলে নেওয়া, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তুলে নেওয়া বেবস্থা করা। , মরিচ ঝাঁপি বাসিন্দাদের শান্তিপূর্ণ ভাবে ব্যবসাপটি ও পুনর্বাসন কাজকর্ম বাধাহীনভাবে চালিয়ে যেতে দেওয়া হয়।।  
দাবি গুলোর মাধ্যমে সরকার কে 24 ঘন্টা সময় দেওয়া হয়।। কিন্তু 24 ঘন্টা কেটে গেলেও সরকার কোন উত্তর দেয় নি। তাই বাধ্য হয়ে মরিচঝাঁপির আক্রান্ত বাসিন্দারা তাদের সাংবিধানিক ও আইনি অধিকার রক্ষার জন্য ভারতীয় 226 ধারা অনুযায়ী কলকাতা হাইকোর্ট এ মামলা করে।
এই মামলার ভিত্তিতে হাইকোর্ট মরিচঝাঁপি পক্ষের আইনজীবীকে এলাকা পরিদর্শনে আদেশ দেয়। 
আইন জীবীরা সেখানে পৌঁছে দেখল এক যুদ্ধে ঘটে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ। একটি পাথরের উপর শাঁখা ভাঙা পরে আছে, নিশ্চয় কোন মহিলকর উপর বল প্রয়োগ করা হয়েছে ।স্কুলের আসবাব পত্র ভেঙে পরে আছে।  ঘর বাড়ি গুলো সম্পুর্ন ভেঙে গেছে , ডাক্তার খানা টি ধ্বংস হয়ে গেছে।।  আজাদ হিন্দ হাসপাতাল আগুনে পোড়ানো হয়েছে। বাজারের বহু চালাঘর দোকান আগুনে পোড়ানো হয়েছে। এই অঞ্চলের বিড়ি ও রুটি কারখানা সরকার পক্ষের দল লুট করে নিয়েছে।। তারা বাসিন্দাদের কাছে শুনছিলেন তাদের করুন কাহিনী।। কিভাবে তাদের ওপর পুলিশ ও গুন্ডা অত্যাচার চালিয়েছে হত্যা ও ধর্ষণ করেছে।।বলে রাখি হতাহতের সংখ্যা ছিল শিশু নর নারী সমেত 7000।   আইনজীবী রা ঘটনার ছবি তুলতে গেলে পুলিশ হটাৎ ই বাঁধা দেয়। তাদের ফটো তুলতে নিষেধ করে। কিন্তু আইন জীবীরা ও কোর্টের নির্দেশনামা দেখালেন।। কিন্তু তাতেও তারা মানলেন। কার্যত এই যাত্রা ঠিক ঠাক সফল হল না।। 
এর পর কোর্টে শুরু হল মরিচঝাঁপি মানুষদের মানবাধিকার এর জন্য লড়াই।। মরিচঝাঁপি বাসিন্দার পক্ষের আইনজীবী তার উপযুক্ত তথ্য পেশ করলো , আর বিরোধী সরকার পক্ষের আইন জীবী নারায়ণ গুপ্ত ছিল।। সরকার পক্ষের আইনজীবী এলাকাটিকে বনসংরক্ষন এর জন্য সংরক্ষিত বলে আদালতে পেশ করতে লাগলো।। একটি 26 ধারার দীর্ঘ বয়ান দিয়ে সরকারের পদক্ষেপ গুলো কে সমর্থন দিল।। ব। এর উপর ভিত্তি করে বিচারপতি তার শেষ রায়ে সরকার পক্ষের হয়েই দাঁড়ালো।। মরিচঝাঁপি বাসিন্দারা হেরে গেল।। তাদের উপর ঘটে যাওয়া অন্যায়ের সু বিচার পাওয়া হল না। এই এভাবে এক রক্তাক্ত ইতিহাসের সমাপ্তি হল। শোনা যায় সুন্দর বনের নরখাদক বাঘ নাকি এই মরিচ ঝাঁপি বাসিন্দাদের মাংস খেয়েই নরখাদক হয়।  কারন সরকারের পুলিশ ও গুন্ডাবাহিনী বাসিন্দাদের হত্যা ,করে তাদের লাশ গুম করার জন্য বাঘের কাছে ছেড়ে আসতো। শিশুদের কুমিরের মুখে ছেড়ে আসতো।  কয়েক দল সাংবাদিক এই অত্যাচারের কাহিনী দেখে বলেছিলেন নিজেদের কমিউনিস্ট বলে দাবি করুক বা অন্য কিছু। সমাজের উঁচু শ্রেণীর মানুষ কখন নিচু দলের মানুষের প্রতিনিধি হতে পারে না। বামপন্থি দল তারা কথায় কথায় গরিবের পক্ষে ধর্ণা তোলে। সর্বহারা মানুষদের জন্য তারা দিন রাত আন্দোলন করে যায়। কিন্তু ক্ষমতায় এসে সে গরিব সর্বহারা দের সরকার ই আবার ওই সব মানুষদের উপর বেশি শোষণ করে। প্রশ্ন জাগে যেই বামপন্থি সরকার প্যালেস্টাইনে উদ্বাস্তু অধিকার নিয়ে কথা বলে । তারাই আবার কি করে বাঙালি উদ্বাস্তু দের অধিকার হরণ করে।।  সাধে বলে এই উপমহাদেশের সবচেয়ে সুবিধাবাদী তারাই।।।  একটা জাতি বাঙালি হয়েও বাঙালি হয়ে উঠলোনা।।

তথ্য সূত্র  (খুব শক্তিশালী নয় কারন সরকার স্বৈরাচারী হলে তার পক্ষে প্রমান জোগাড় করা মুশকিল হয়ে পরে)



 বিশদ জানতে এই বইটি পড়তে পারেন

 বাসিন্দারা কাঠের নৌকা বানাচ্ছে 

 সাম্প্রতিক কালের কিছু  সংবাদ মাধ্যমের খবর 

Times of i

The wire

Hindustan times

মরিচঝাঁপি বাসিন্দাদের মুখে শুনুন









উদ্বাস্তু তরফের আইন জীবী রা কি বলেন

Friday, September 27, 2019

বাঙালির ঘরে আজ অবাঙালীরা পদধ্বনি

নমস্কার , হামি বাঙালি বোলতা হেয়, হ্যাঁ আমরা বাঙালি , আমরা শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি তে অনেক উন্নত।। আমাদের নেতাজি রবীন্দ্রনাথ নজরুল সবাই রয়েছে।। 47 এ বাংলা ভাগ হয়ে আমরা পশ্চিমবঙ্গ পেয়েছি।। পেয়েছি কলকাতা কে।। কিন্তু এই বাংলার কলকাতায় একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে , সেটা হল বাংলায় অবাঙালি দের আগমন ,এরা এসে বাংলা টাকে গুটখা আর পানের পিকে ভরিয়ে দিয়েছে আর কলকাতায় এখন বাংলা বদলে হিন্দি প্রচলন করে দিয়েছে এমনকি বাংলার অর্থনৈতিক ও রাজনীতি তেও এরা প্রবেশ করেছে ।
কিন্তু wait,,,, আচ্ছা বাঙালিরা কি পান বিড়ির দোকান খোলে ?? ধুর ওই সব পান বিড়ি সব ছোটলকি ব্যবসা , আচ্ছা কচুরি সিঙ্গারা দোকান খোলে, ওরে বাবা ওটা তো খেতেই ভালো লাগে, আর তাছাড়া তেল ময়দা কে ঘাটবে, ওটা রবিবার সকালের breakfast ?? আচ্ছা মন্টু দা কলকাতায় বড় বড় বাবুদের ড্রাইভার কারা যেন? ঐতো মাওরা গুলো।। আর ট্যাক্সি আলা, ওই গুলো তো বিহারের মাল গুলো , ও আচ্ছা।। আমার পাড়ায় সকাল সকাল দুধ দিয়ে যায় ওরা কে জানো মন্টু দা।। মন্টু দা– কে রে, ওরা ইউপি বিহারীর লোক।। শুনে মন্টু দা হেসে বললো হ্যাঁ ওই স্টেশন এর কুলি গুলো তো অবাঙালি,রবিবার ছুটির দিন চুল কাটতে গেলেও একজন অবাঙালি থাকে, আমি শুনে বললাম ধুর এরা তো সব ছোটখাটো নিম্ন মানে কাজ গুলো করে।। কিন্তু দাঁড়ান।। ওই যে মারওয়ারী গুলো আছে ওরা নাকি সোনা গয়নার কিসব ব্যবসা করে।। আচ্ছা প্রমোটিং বেবসা গুলো এই যে রাতারাতি বাড়ি দালান উঠছে শপিং মল হচ্ছে এইগুলোর মালিক এরাও বেশিরভাগ অবাঙালি মারওয়ারী, , আচ্ছা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি তে ও তো দেখছি অবাঙালি প্রোডিউসার যেমন ভেঙ্কটেশ ফিল্ম, আজকাল দেখছি চাকরির বাজার গুলোতে ও অবাঙালি বেশি।। সালা ব্যাংক গুলোতে ও আজকাল অবাঙালি রাই বসে, অর্থাৎ একটা সিদ্ধান্ত আসা গেল যে বাঙালির অর্থনীতিতে এখন অবাঙালীরাই জায়গা করে নিয়েছে,ছোট থেকে বড় সব পেশা তেই এখন অবাঙালি দের রাজ ই বেশি । কিন্তু কেন এমন হল? এর কারন কি ? আসুন এই কারন গুলো নিচে আলোচনা করি,
ক – প্রথমত এই যে যারা ছাতুয়ালা, ট্যাক্সিয়ালা, ড্রাইভার, পান বালা এরা বাংলায় থেকে এদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা শিখিয়ে এখানে এনে
বিভিন্ন চাকরি তে প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় বসাচ্ছে
খ এদের মধ্যে অনেকে আবার এই ব্যবসার মধ্যেই লাগিয়ে দিচ্ছে যার ফলে এদের জায়গা তে কেউ আর নতুন করে জায়গা করতে পারছে না।
গ এদের মধ্যে আবার অনেক এখানকার বাবুদের পায়ে তেল লাগিয়ে কিংবা তাদের পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রভাবিত করে এদের ছেলে মেয়েদের বড় বড় কাজের পদে নিয়োগ করে দিচ্ছে আর আমরা সেখান থেকে বঞ্চিত হয়ে যাচ্ছি।
ঘ আরেকটা যারা বিত্তশালী অবাঙালি আছে , তারা বাংলায় দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে এখানে অঢেল টাকা ঢেলে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করছে।
এই তো গেল এদের কথা , এবার নিজেদের কারন গুলো আলোচনা করি।।
ক          এইযে ছাতুয়ালা ট্যাক্সি ওয়ালা, পানওয়ালা যে পেশা রয়েছে এইগুলো বাঙালিরা কেন করে না। তাদের তো কেউ বারণ করে নি, নাকি পান বেচলে মান যাবে।। আচ্ছা কচুরির দোকান সিঙ্গারা দোকান এইগুলো ও তো করতে পারে ! নাকি খালি মমতা দির কথায় চপ ভাজবে,
খ।         আচ্ছা আমরা বাঙালিরা পরনিন্দা পরচর্চা, লোকের পিছনে কাঠি করতে পারি।। কিন্তু লোকের পেছনে তেল মাখাতে কেন পারিনা! ও আচ্ছা আমরা তো বাঙালি।। আমরা উঁচু দরের একটু।। আর তাই এই জন্য অবাঙালি রা ফরচুন তেলে ভেজে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে নিয়েছে।
গ       আচ্ছা আমরা বাঙালিরা খালি চাকরির আশায় থাকি কেন? ব্যবসা করতে তো পারি।। ব্যবসা করতে ভয় কিসের।। ও আচ্ছা চাকরি তো বিনা ইনভেস্ট এ প্রফিট আর bussiness তো আগে টাকা ঢালো তারপর লাভ।  আসলে বাঙালিরা ভীতু।। কিন্তু অবাঙালি রা এতটা ভীতু নয় কারন তারা জানা risk is life , আর এর ফলে বাঙালির আর বিত্তশালী হয়ে ওঠা হয়না,
ঘ       ব্রিটিশ রা একদা বাঙালি সমাজ কে শিক্ষিত করেছিল তাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য যাতে তাদের অফিসে চাকরের মত খাটতে পারে, আর আমাদের বাঙালি সমাজ সেই ধারাই অব্যাহত রেখেছে , তফাৎ শুধু একটাই ,তখন ছিল ব্রিটিশ আর এখন অবাঙালি কোম্পানি। এমনকি আমরা রোজ বাসে ট্রেনে বাদুড় ঝোলা অবস্থায় আসি এইসকল ac গাড়িতে আসা অবাঙালি মালিকের কোম্পানির চাকর গিরি করার জন্য।
আসলে আমরা বাঙালিরা কখন নিজেদের ভুল কখন দেখেনা সবসময় অন্যের ভুল টাই দেখে আসে।। এই যে অবাঙালি রা বাংলার ছোট অর্থনীতি থেকে  শুরু করে বড় অর্থনীতি পর্যন্ত অধিকার করে ফেলেছে এইগুলো সব আমাদের ই ব্যর্থতা কারন আমরা নিজেদের ঐতিহ্য গুন গাইতে গিয়ে সব হারিয়েছি।
এখন আমরা যতই কান্নাকাটি করি হয় হায় করি অবাঙালি খেদাও বলে আওয়াজ তুলে ও কোনো লাভ হবে না কারন বাঙালির অর্থনীতি তে এখন অবাঙালি রা জাঁকিয়ে বসে আছে।, বাঙালির মেরুদন্ড এখন অবাঙালি রাই। এইগুলো একদিনে হয়নি বহু দিন ধরে তিলে তিলে হয়ে এসেছে , আর এইসব গুলোতে অবাঙালি রা শুধু কিন্তু তেল মাখিয়ে হয়নি। তারা রীতি মত নিজেকে সেই জায়গায় যোগ্য করেছে , পরিশ্রম করেছে বহুকাল , তারা নিজের যোগ্যতার উপর ভিত্তি করেই গড়ে
তুলেছে বাংলায় অবাঙালি সাম্রাজ্যবাদ। আমাদের ব্যর্থতা আমাদের গাফিলতি আমাদের উচ্চ আকাঙ্খার ফলে আমরা বাংলায় কর্মহীন হয়ে পড়েছি। তাই বাংলায় বাঙালিদের অধিকার রক্ষা করতে গেলে আগে আমাদের জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ ও করতে হবে, বাঙালি জাতির উন্নতিতে বাঙালি কেই এগিয়ে আসতে হবে। নাহলে ভবিষ্যতে এই কলকাতা কালকাত্তা হয়ে যাবে,

আহা কি সুন্দর ই না হত

চেয়ারের উপর বসে ছিলাম । হটাৎ দূর থেকে একটা আওয়াজ আসছিল।। আওয়াজ নয় ঠিক স্লোগান বটে।। স্লোগান টি ছিল। জোর করে সরকারি বেসরকারি চাকরি দেওয়া চলছে না চলবে না চলছে না চলবে না । আমি ধরপাকড় করে উঠে পড়লাম। তারপর মিছিল টা কাছাকাছি এলে একটা লোক কে জিজ্ঞাসা করলাম যে এটা কিসের মিছিল।।
তখন লোক টি বললো।। জানেন না দেশে যে ভাবে চাকরির সংখ্যা বেড়েছে তাতে করে জনগন ক্ষুব্ধ হচ্ছে।।
আমি বললাম সেকি তাই নাকি  তারপর।
লোকটি বলল জানেন ওই সাম্যবাদী, মেহনতির  লোক গুলো আমাদের তিন টা চারটে করে চাকরি দিচ্ছে। চাকরি করতে অস্বীকার করলে তারা রীতি মত হুমকি দিচ্ছে। এমনকি কয়েকজন কে তুলে নিয়ে গিয়ে ব্যাংক এর ম্যানেজার ও বানিয়ে দিয়েছে।। কি বিপদ বলুন তো।
আমি বললাম।। ঠিক ই তো এই অন্যায় সহ্য করা যায় না । আমার কাছে ও কাল দুটো সাম্যবাদী এসেছিল আমার বাড়ির পাঁচিল টপকে আমাকে রীতি মত শাসিয়ে গেছে ওই ব্যাংক এর লোন এর ব্যাপারে। আর ওই মহেশ দের ঘরে জানলার কাঁচ ভেঙে ssc র appointment letter এর কাগজ ছুড়ে গেছে ।  এদের কিছু বলা ও যাচ্ছে না । প্রতিবাদ করলেই account এ বোনাস, DA , ইনসেন্টিভ ঢুকিয়ে দিচ্ছে। একে বারে যাচ্ছে তাই।
পাশের ঘরের কাকিমা এতক্ষন ঘটনা গুলো শুনছিলেন। উনিও বলে বসলেন জানেন।। কাল খবরে কি বলছে??
আমি ও লোকটি বললো কি বলেছে।।
বলেছে নাকি কালা ধন ফেরৎ এসেছে।। সে কি ভয়ংকর কালো কালো টাকা।। আমার তো শুনে ভয় করছে ।। এই বুঝি ব্যাংক এ 15 লাখ ঢুকে গেল । এইবলে রাধে গোবিন্দ রাধে গোবিন্দ বলে ঘরে ঢুকে গেল। আমিও লোক টিকে বিদায় দিয়ে ঘরে ঢুকে গেলাম।। বিকেলে আমার এক বন্ধু এলো  আমরা চা খেতে খেতে আলোচনা করছিলাম যে নেতা গুলো আজ কত সৎ হয়ে গেছে বল।। এত সৎ যে অভিধান থেকে সত্যবাদী শব্দ উঠে গিয়ে কেবল নেতা শব্দ টা বসে গেছে । আমি শুনে বললাম হ্যাঁ তা তো হবেই।তারপর আবার বন্ধু টি বললো জানিস একটা সমস্যায় পড়ছি ।
আমি বললাম কি সমস্যা।
সে বললো , ব্যবসার জন্য যে loan টা নিয়েছিলাম সেটা ব্যাংক সুদে আসলে ফেরত নিতেই চাইছে না। ফেরত দিতে গেলেই ধমক দিয়ে বাড়ি পাঠাচ্ছে । আমি বললাম আহা স্বাধীনতার এত বছর পর ও সাধীনতা নেই।  এরপর দুজনে একটু বাইরে বেরোলাম , রাস্তায় একটি ভিখারি ভিক্ষা করছিল তার সামনে paytm , bhim , check box , pos machine সবই ছিল । আমি একটা চেক নিয়ে ভিকারীটির সেক্রেটারি কে দিলাম । তারপর কিছু দূরে গিয়ে দেখলাম একজন দিল্লির ছেলে একটা machine আবিষ্কার করেছে । ওই machine এ আলু ঢোকালে সোনা হয়ে বেরোয়। আমি আর আমার বন্ধু একটা mechine কিনে ফেলে বাড়ি চলে এলাম।। এরপর বাড়ি এসে টিভি চালাতেই দেখলাম খবরের হেডলাইন , রাস্তায় একা পেয়ে একটি অসহায় যুবক কে  পাঁচটি যুবতী মিলে গণধর্ষণ করে ফেলেছে , তারপরের হেডলাইন " গরিবের সেবা কাজে মনোনয়ন পত্র নিয়ে শান্তি মূলক বিতর্ক চলছে । একদল নেতা তো গরিবের দুঃখ মেটানোর সুযোগ পাবার জন্য কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে মূর্ছায় পরে গেছে।। আরেকদল দেখি বলতে শুরু করেছে। আমাদের কে গরিবের উপকার করার একটা সুযোগ দিতেই হবে না হলে বন্ধ ডাকবো।। এইভাবে ভাবে তাদের কোলাকুলি দেখতে দেখতে। হটাৎ ঘুম ভেঙে গেল।। ঘুম থেকে উঠেই স্বপ্ন গুলোর কথা মনে পড়লো ।। আহা কি সুন্দর স্বপ্ন ।। ঠিক যেন গান্ধীজির রামরাজ্য আর মার্ক্স এর সাম্যবাদী সমাজ এর মত।

আজীবিক ধর্ম

মুখবন্ধ -- হিন্দু ধর্মে বর্নবৈষম্য ও ব্রাহ্মণ বাদের অত্যাচার এর কারনে ভারতে বিভিন্ন সময় ধর্ম আন্দোলন কিংবা ভক্তিবাদী আন্দোলন ঘটে।। কেউ ...